পটুয়াখালীতে ইপিজেড প্রকল্প
জমি নিয়ে ভুয়া বানোয়াট আপত্তির অভিযোগে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষোভ
আপলোড সময় :
০২-১১-২০২৪ ১২:২৫:৪৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০২-১১-২০২৪ ১২:২৫:৪৪ অপরাহ্ন
পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের পঁচাকোড়ালিয়া গ্রামের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ (ইপিজেড) প্রকল্পে অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিগ্রস্ত মালিকেরা ক্ষতিপূরণের টাকা উত্তোলন নিয়ে নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। অন্য জেলা থেকে আসা কতিপয় ব্যক্তি ইপিজেড প্রকল্পভুক্ত জমির ভূয়া কবুলিয়াত, নকশা, ম্যাপ, পর্চা ইত্যাদি তৈরি করে আপত্তি দাখিল করায় তাঁদের এ বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। এতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এবং তাঁরা এসব অবৈধ আপত্তি অবিলম্বে বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে প্রকল্প এলাকার মো. সাইদুর রহমান নামের বাসিন্দা গত ১৭ অক্টোবর জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, আউলিয়াপুর ইউনিয়নের পঁচাকোড়ালিয়া গ্রামে 'পটুয়াখালী ইপিজেড' প্রকল্প এল.এ ০১/২০২১-২০২২ নং কেস মূলে বাস্তবায়ন করছে। এবং এজন্য ৪’শ একরেরও বেশি জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিগণ তাদের জমি, বাড়ি-ঘর, গাছপালার ক্ষতিপূরণের টাকা ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে উত্তোলনের জন্য আপনার কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট এল.এ শাখায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি দাখিল করছেন। কিন্তু মাদারিপুর জেলার মোস্তফাপুর, পেয়ারপুর এলাকার একটি চক্র জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ইপিজেড প্রকল্পভুক্ত জমির ভূয়া কবুলিয়াত, নকশা, ম্যাপ, পর্চা ইত্যাদি তৈরি করে আপনার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আপত্তি দাখিল করেছেন। আপত্তি দাখিলকারী রবি দাস, পরিমল দাস, বিশ্বজিত সাহা, নিখিল বিশ্বাস, বজলুর রশিদ ও মতিয়ার রহমান পঁচাকোড়ালিয়া মৌজায় আমার নিজের ৮ টি খতিয়ানসহ দুইশতাধিক খতিয়ানের উপর আপত্তি দাখিল করেছেন যা অযৌক্তিক, মিথ্যা, বানোয়াট ও ভূয়া। এসব লোকজন বা তাদের পূর্বপুরুষগণ কখনই এই এলাকায় বসবাস করেননি। এলাকার লোকজনও তাদেরকে চেনে না। গত ১০০ বছরেও এখানে তাদেরকে কোন জমি ভোগ-দখল করতে কেউ দেখেননি।
লিখিত অভিযোগে তিনি আরো উল্লেখ করেন, আমরা বংশ পরম্পরায় এসব নিষ্কণ্টক জমিতে ঘর-বাড়ি, পুকুর, রাস্তাঘাট নির্মাণ করে, গাছপালা রোপন করে ভোগ-দখল করে আসছি। নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ইপিজেড প্রকল্প এলাকার প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ইপিজেড প্রকল্পভুক্ত জমির ভূয়া কবলিয়াত, নকশা, ম্যাপ, ইত্যাদি তৈরির মাধ্যমে আপনার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাখিলকৃত অবৈধ আপত্তি অবিলম্ভে বাতিল করা না হলে ইপিজিড এলাকার প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়বে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাদারিপুরের মোস্তফাপুর এলাকার ছোট বাড্ডা গ্রামের রবি দাস জানান, আপত্তিকৃত জমি তিনি ওয়ারিশ সুত্রে মালিক। কতিপয় কুচক্রী মহল অশুদ্ধ রেকর্ডমূলে ক্ষতিপূরণের টাকা উত্তোলনের পায়তার করছে। এই অবস্থায় মোকদ্দমা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উক্ত খতিয়ানের ভূমির ক্ষতিপূরণের টাকা স্থগিত করার জন্য তিনি আপত্তি দিয়েছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসানাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, আপত্তি দিলেও পুঙ্খানুপুঙ্খানুভাবে যাচাই-বাছাই করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কোনভাবেই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয় সে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।
বাংলা স্কুপ/পটুয়াখালী প্রতিনিধি/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স